Forum for Energy Reporters Bangladesh
Image default
Bangla News

রাজধানীতে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাট

ফয়েজ আহমেদ তুষার:দেশে বিদ্যুৎ চাহিদার চেয়ে উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। এরপরও রাজধানীর অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। বিতরণ ও সঞ্চালন খাতে সময়োপযোগী উন্নয়ন না হওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। এসব খাতে চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা গেলে সমস্যা সমাধান হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কাজলা, মৃধাবাড়ি, মাতুয়াইল, রায়েরবাগ, শনির আঁখড়া, কোনাপাড়া, বাঁশের পুলসহ আশপাশের এলাকায় দিনে দুই থেকে তিনবার লোডশেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কমবেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কথা বলেছেন মিরপুর, মেরুল, বাড্ডা, শাহজাদপুর, পুরানা পল্টন, বাংলাবাজার, জুরাইন, খিলগাঁও, গোড়ানসহ আরও কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. বেলায়েত হোসেন জানান, দেশে চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। ফলে কোথাও লোডশেডিং করতে হয় না। পিডিবি’র তথ্যানুযায়ী, ক্যাপটিভি, অফগ্রিড নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও আমদানিসহ দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৪ হাজার ৫শ’ মেগাওয়াটের বেশি। গত শুক্রবার দেশে গড় বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল দশ হাজার ৭৫২ মেগাওয়াট। সমপরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সরবরাহ করায় কোথাও লোডশেডিং করতে হয়নি। শুক্রবার ঢাকায় চার হাজার ২০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পুরোটাই সরবরাহ করা হয়েছে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার দেশে মোট বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল ১২ হাজার ৬৭ মেগাওয়াট, ঢাকায় চাহিদা ছিল ৪ হাজার ২০৯ মেগাওয়াট। বুধবার দেশে মোট বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল ১১ হাজার ১২১ মেগাওয়াট, ঢাকায় চাহিদা ছিল ৪ হাজার ১৬১ মেগাওয়াট। ওই দু’দিনই চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করে লোডশেডিং শূন্য রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পিডিবি। তবে পিডিবির দাবির সঙ্গে বাস্তবে মিল নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকার দক্ষিণাঞ্চলেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ বেশি। ঢাকা দক্ষিণ ও নারায়ণগঞ্জের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণে নিয়োজিত ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)।

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক (প্রকৌশল) গিয়াস উদ্দিন জোয়ার্দার এ বিষয়ে গতকাল বিকেলে সংবাদকে বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে কাজলা অঞ্চলে সাব-স্টেশন নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। ওই সময় বিদ্যুতের লাইন স্থানান্তরকালে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে পালা করে কয়েকদিন বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এখন আর নিয়মতি বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ার কথা নয়।

ঢাকায় ওভারহেড বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার (ঝুলন্ত তার) বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক সময় ঝড়ে তার ছিড়ে যায়, ট্রান্সফরর্মার বিকল হয়, ফিউজ কেটে যায়। এসব রক্ষণাবেক্ষণ কাজে সাময়িক বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়। যেটা নিয়মিত প্রক্রিয়া। ডিপিডিসি আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলিংয়ের (ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা) দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি বাস্তবায়ন হলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট অনেকটাই কমে আসবে।

রাজধানীর পোস্তগোলা, ঝিগাতলা ও নারায়ণগঞ্জের বন্দরের চর সৈদয়পুরে সাব-স্টেশন স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে ১৮টি সাব-স্টেশন রয়েছে। ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় ৫২টি সাব-স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে চায়নাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মালামাল আমদানিসহ অন্যান্য কাজে কিছুটা বাধা সৃষ্টি হলেও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে যথাসাধ্য প্রচেষ্টা অব্যহত রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী জোয়ারদার বলেন, এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে মানসম্পন্ন ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Related Posts

১০০ কূপ খনন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

FERB

বিদ্যুৎ-জ্বালানির প্রকল্প বাতিলে সংকট মিটবে?

FERB

জ্বালানি তেল খালাসে নতুন যুগে বাংলাদেশ

FERB