Forum for Energy Reporters Bangladesh
Image default
Bangla News

বিপিডিবি দক্ষ হলে ঘাটতি কমে আসবে: প্রতিমন্ত্রী

১.১৬ টাকা ঘাটতি রয়েছে বিদ্যুতের দামে, বিপিডিবি দক্ষ হলে ঘাটতি কমে আসবে। বিপিডিবিকে ধীরে ধীরে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

শনিবার (৮ মে) এফইআরবি আয়োজিত ভার্চুয়াল সেমিনারে বছরে ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি প্রসঙ্গে তিনি এ মন্তব্য করেন। এফইআরবির চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকারের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল এই সেমিনার সঞ্চালনা করেন ইডি শামীম জাহাঙ্গীর।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমি ভর্তুকি বলবো না সরকার বিনিয়োগ করছে, এখান থেকে কতো দূত বের হতে পারে, বিপিডিবিকে ভাবতে হবে। কোম্পানিগুলোর আরও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করার জন্য। এতে এক দুই পার্সেন্ট খরচ কমে আসবে। নতুন প্রযুক্তির দিকে যাওয়া উচিত। পুরাতন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটে ২৬ হাজার কোটি টাকার মতো উন্নয়ন বাজেট আশা করছি। বিশেষ করে সঞ্চালনের দিকে গুরুত্ব দিয়েছি, ডিস্ট্রিবিউশনের দিকে গুরুত্ব দিয়েছি।

তিনি বলেন, ট্যাক্স ও রেজিস্ট্রেশন ফ্রি বিষয় এসেছে। আমার এখন ভাবতে হবে প্রায় ১০ বছর ট্যাক্সের সুবিধা পেয়ে এসেছেন। প্রথম ভিত তৈরি হয়েছে, শক্তিশালী জায়গা তৈরি হয়েছে। তবে আমাদের এটাও বুঝতে হবে বৃহৎ একটি অংশ বেশি মূল্য দিতে পারে না। আরইবির ৮০ লাখ গ্রাহকের মতো লাইফ লাইন গ্রাহক রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গরম সামাল দিতে সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালাতে হয়েছে। এতে ১৪ হাজারের মতো উৎপাদন। বুঝতে হবে পুরাতনগুলো বন্ধ করলে সামাল দেওয়া যাবে কি না। আমরা এক মিনিটের জন্যও লোডশেডিং দেখতে চাই না। এ বিষটি বিদ্যুৎ বিভাগকে নিশ্চিত করতে হবে। গ্যাস সংকটের কারণে প্লান্টগুলো অনেক ক্ষেত্রে চালাতে পারিনি। রংপুরে কয়লার অভাবে ১৫০-২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করতে হচ্ছে। পায়রা ট্রান্সমিশনের অভাবে বিদ্যুৎ আনতে পারিনি।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে মধ্যেই হিটওয়েভে আমরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। এটি কিন্তু বিশাল স্বস্তির খবর।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের কেনা-বেচার মধ্যে ১.১৬ টাকা লোকসান হচ্ছে। আমরা যে দামে কিনছি সে দামে বিক্রি করতে পারছি না। যে কারণে প্রতিবছর ৭-৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়। এ বছর মনে হয় লোকসান আরও বাড়বে। কারণ ফার্নেস ওয়েলের ওপর ডিউটি বসিয়েছে সরকার।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতের বিশেষ চাহিদার কারণে আমাদের বাজেট কমতে পারে বলে ইঙ্গিত পাচ্ছি। আশা করছি রিভাইস বাজেটে সরকার বিষয়টি দেখবেন।

৩৪ শতাংশ ট্যাক্স বসিয়েছে ওনাদের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। অ্যাডভান্স পেমেন্ট করতে হয়। আমরা পরে সরকারের কাছ থেকে পাই। সরকার ২ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। যা হোক ভুল বুঝাবুঝি। চিন্তায় ছিলাম ঈদের আগে আদৌ পেমেন্ট করতে পারবো কিনা। ভর্তুকির টাকা ঈদের আগে এনে পেমেন্ট দিতে পারবো।

বিপিডিবি চেয়ারম্যান বলেন, আইপিপির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আপনি যদি বলেন, আমার প্লান্ট পুরনো হয়নি। দেশের এই সম্পদ সরকার কেনো কাজে লাগাবে না। কেনো এই প্রশ্ন তুলছেন, সরকারতো সেইভাবেই মডেল করেছে। আমরা দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে কুইক রেন্টাল নিয়েছি। তখনতো বেশি টাকা নিতে আপত্তি করেননি। বেশি টাকা নিয়ে পে-ব্যাক করেছেন অর্ধেক, বাকি টাকা কি করেছেন আপনারা জানেন। স্বল্প সময়ের জন্য পরিকল্পনা করেছেন। এখন কেনো এই প্রশ্ন তুলছেন।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমাদের জেনারেশন ৭ হাজার মেগাওয়াট সারপ্লাস। তারপরও আমাদের লোডেশেডিং হয়। কোনো কোনো জায়গায় আমাদের বটমলেক রয়ে গেছে। মোটা দাগে কাজ হয়ে গেছে. এখন ফাইন টিউনিংটা করা দরকার।

বিপপার চেয়ারম্যান ইমরান করিম বলেন, মূল যে সমস্যাগুলো এনবিআর রিলেটেড। ২০১৯-২০ সালের সঠিক খেলাপী নীতি ফলো করে তাহলে অনেকগুলো কোম্পানি খেলাপী হবে। ফার্নেস অয়েলের সিডি ভ্যাট শুধুমাত্র ট্যাক্স জিডিপির অংক বাড়ানো প্রয়াস, অন্তত অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য এটি স্থগিত করা যায় কিনা। মালামাল আমদানি করার জন্য অগ্রিম আয়কর দিতে হয়। আমাদের আয়কর নেই তাহলে কোথায় সমন্বয় করবো। এনবিআর কিছু কাজ করে প্রাতিষ্ঠানিক দর্শনের মধ্যে পড়ে না।

মূল প্রবন্ধে উপস্থাপন করেন বিপপার ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, আইপিপি ইউনিটে গত বছর প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়েছে ৭ টাকা, রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র খরচ পড়েছে ৮.৩৪ টাকা এবং ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে খরচ পড়েছে ৬.০১ টাকা। আইপিপি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো লোড সেন্টারের কাছে। এতে নিরবিচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধ করা হচ্ছে না। বিলম্বে বিল পরিশোধ করায় উদ্যোক্তাদের সমস্যা হচ্ছে। বিইআরসির ট্রাইব্যুনালের অমীমাংসিত বিষয়গুলো দেখার কথা। কিন্তু বিইআরসি যথাযথ ভূমিকা পালন করছে না।

Related Posts

আশা জাগাচ্ছে ভোলার গ্যাস, সর্বোত্তম ব্যবহারে পরিকল্পনা

FERB

টেকসই জ্বালানিতে বড় উন্নতি বাংলাদেশের

FERB

রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

FERB