Forum for Energy Reporters Bangladesh
Image default
English News

প্রতি মাসেই এলপিজির দাম পরিবর্তনের চিন্তা ঠিক না: প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা বীরবিক্রম ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা বীরবিক্রম ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রতি মাসেই এলপিজির দাম পরিবর্তন করা ঠিক হবে না।  গ্রামের মানুষ প্রতি মাসে দাম পরিবর্তনের বিষয়টি ব্যবসায়ীদের মতো বুঝবে না। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হবেন। সঙ্গত কারণে এলপিজির একটি নির্দিষ্ট দামে বিক্রি হওয়া প্রয়োজন।‘

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) এক সেমিনারে তিনি এই কথা বলেন। পাক্ষিক ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’ ম্যাগাজিন  ‘এলপিজি প্রাইসিং ডাইলেমা’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।

ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান, বুয়েটের অধ্যাপক ইজাজ হোসেন, এলপিজি অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) সভাপতি আজম জে চৌধুরী। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বসুন্ধরা এলপিজি গ্যাস কোম্পানির হেড অব ডিভিশন জাকারিয়া জালাল।

সেমিনারে এলপিজি সিলিন্ডারের কারণে দুর্ঘটনার বিষয়ে ব্যবসায়ী উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়ে সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে সেটার দায়ভার সবার। শুধু সরকারের নয়। সেইফটির ব্যবস্থা করতে হবে প্রত্যেক কোম্পানিকে।’

তিনি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে সরে এসে বাণিজ্যিক জ্বালানিতে নিয়ে যাওয়ার ওপর একটি পরিকল্পনা করার চিন্তা করছি আমরা। আগামী দুই দশকের মধ্যে দেশের সব মায়েরা বাণিজ্যিক জ্বালানি ব্যবহার করবেন। তাই এখন থেকেই সরকার পরিকল্পনা করার কথা চিন্তা করছে।‘

ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘এলপিজির ভোক্তারা যদি বিইআরসির মাধ্যমে নির্দিষ্ট দাম পায় সেটা খুবই ভালো। জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। জনগণের স্বার্থে এই দাম নির্ধারণ করে দেওয়া জরুরি এবং এইভাবেই দাম নির্ধারণ করা প্রয়োজন। ক্যাবের মূল চিন্তা ভোক্তা যাতে ন্যায্য মূল্য পায়। তাই আমরা মনে করি গণশুনানির মাধ্যমে বিইআরসির অধীনে দাম নির্ধারণ হলে ভোক্তার অধিকার নিশ্চিত হতে পারে। আমরা কারোরও ক্ষতি চাই না। ব্যবসায়ীদেরও না,  ভোক্তাদেরও না।’

ইজাজ হোসেন বলেন, ‘অতিরিক্ত বিনিয়োগ করা হচ্ছে এই খাতে। গলদ হচ্ছে গোড়ায়। চাহিদা এত বাড়বে না যা কোম্পানিগুলো প্রোজেকশন করছে। সে চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে অতিরিক্ত বিনিয়োগ করা ঠিক হচ্ছে না। অতিরিক্ত বিনিয়োগ করার পর এখন তারা বলছে লোকসান দিচ্ছে। এই লোকসানের কারণে বাড়ছে এলপিজির দাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমদানি  করা গ্যাসের দামের ওপর নির্ভর করছে বলেই একটি নির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ করা কঠিন। কমপক্ষে তিন মাস অন্তর দাম পরিবর্তন করা উচিত। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ওঠানামা করে।  একটি নির্দিষ্ট প্রাইসিং ফর্মুলা থাকা দরকার। তবে বিইআরসি  যদি দাম নির্ধারণ করে দেয় সেখানে কথা বলার কিছু নেই।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লোয়াবের সভাপতি আজম জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, ‘দামের ক্ষেত্রে একটা ফর্মুলা করে দিলে ভালো হয়। প্রতি মাসে যদি দাম এডজাস্ট করা হয় আমি কোনও সমস্যা দেখি না। এতে দুই পক্ষই লাভবান হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দেশে দাম কমানো হবে, আর বাড়লে বাড়ানো হবে।‘  

ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ন্যাযতা যেমন গ্রাহকের জন্য দরকার, তেমনি কোম্পানিগুলোর জন্যও দরকার। ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করছে, তাদের লাভের বিষয়টি সরকারের মাথায় রাখা দরকার।  আবার গ্রাহকেরও যাতে দাম নাগালের মধ্যে থাকে। সুতরাং সব মিলিয়েই দাম নির্ধারণ করা উচিত। আমরা সবার জন্য ন্যায্যতা চাই।’

Related Posts

Sheikh Hasina; “Era of Success” in power sector

FERB

Govt sees some relief on power fuel cost with austerity

FERB

Bangladesh gas production plummets to decade-low

FERB