Forum for Energy Reporters Bangladesh
Image default
Bangla News

মুজিব শতবর্ষে বিদ্যুতেও শত

ফয়েজ আহমেদ তুষার : তিন হাজার ৭৯টি গ্রাম। সংখ্যায় বড় হলেও শতাংশের হিসেবে খুবই কম। এই গ্রামগুলো ‘অতি দুর্গম’। এগুলোতে বিদ্যুৎ পৌঁছলেই হবে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, বলছে বিদ্যুৎ বিভাগ। দেশে মোট গ্রাম ৯৮ হাজার ৩১৯টি। এর ক্ষুদ্র অংশ অর্থাৎ ওই তিন হাজার গ্রাম ছড়িয়ে আছে দ্বীপ, দুর্গম চরাঞ্চল এবং পাহাড়ি জনপদে।

এগুলোতে বিদ্যুৎ যাবে কিভাবে? যাবে সাবমেরিন কেবল বা সৌর পদ্ধতিতে। দায়িত্বে রাষ্ট্রীয় বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলোই। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু সংবাদকে বলেছেন, ‘দেশের ৯৯ ভাগ জনগণ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। এই ডিসেম্বরেই গ্রিড এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন হবে। চর এলাকায় বা অফগ্রিড এলাকায় বিদ্যুতায়ন কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও মুজিববর্ষেই (১৭ মার্চ, ২০২০-২৬ মার্চ, ২০২১) তা সম্পন্ন করা হবে।’

প্রতিমন্ত্রী জানাচ্ছেন, ইতোমধ্যে সাগরের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ নিয়ে সন্দ্বীপ উপজেলাকে জাতীয় গ্রিডের আওতায় আনা হয়েছে। রাজশাহীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে বিনামূল্যে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে চরাঞ্চালের বাসিন্দাদের বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে পটুয়াখালী ও ভোলার দুর্গম কয়েকটি চরাঞ্চালেও বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। অফগ্রিডে এখন সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহার করা হলেও পর্যায়ক্রমে এসব এলাকাতেও গ্রিডের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

 

কুতুবদিয়া-হাতিয়া-নিঝুম দ্বীপ

উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ- তিন দিকে বঙ্গোপসাগর আর পূর্বে কুতুবদিয়া চ্যানেল। মাঝখানে প্রায় ২১৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে সাগরের বুকে ভেসে আছে কুতুবদিয়া দ্বীপ। দেশের মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন কক্সবাজারের এই দ্বীপটিকেও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মতো জাতীয় গ্রিডের অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হচ্ছে। কক্সবাজারের মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ যাবে কুতুবদিয়ায়, বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে দুই লাখ বাসিন্দা। হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট (আইপিপি) নির্মাণ করা হবে হাতিয়া দ্বীপে। এর পরে হাতিয়া থেকে নিঝুম দ্বীপে ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া হবে।

পিডিবি সূত্র জানায়, আইপিপিপির মাধ্যমে হাতিয়া দ্বীপে ৮ থেকে ১০ মেগাওয়াট তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে হাতিয়া দ্বীপে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হবে। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে হাতিয়া থেকে চ্যানেলের তলদেশ দিয়ে পারাপার করে নিঝুম দ্বীপ এবং মগনামা হতে চ্যানেলের তলদেশ দিয়ে পারাপার করে কুতুবদিয়া দ্বীপে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হবে। বর্তমানে পিডিবি গ্রাহক সংখ্যা হাতিয়া দ্বীপে ২ হাজার ৫৫৮ জন, কুতুবদিয়া দ্বীপে ১ হাজার ২০০ জন। নিঝুম দ্বীপে কোন গ্রাহক নেই। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৭ এমভিএ বা ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। এসবের মাধ্যমে ৪২ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সুবিধা দেয়া যাবে।

 

এক যুগ আগে ৪৩

এক যুগ আগেও দেশের অধিকাংশ মানুষ হারিকেন বা কুপির আলোর ওপর নির্ভরশীল ছিল। বিদ্যুৎ খাতের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের সময় দেশের ৫৭ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার বাইরে ছিল। সে সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদনে হিমশিম খেত বিদ্যুৎ বিভাগ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত। মানুষ বলতো- ‘বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে আসে’। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে শিল্প ও বাণিজ্যিক উৎপাদনে স্থবিরতা তৈরি হয়।

আর এখন পাওয়ার সেলের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বর্তমানে ২৩ হাজার ৫৪৮ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ)। বিদ্যুৎ বিভাগের মতে, চাহিদার চেয়ে এখন উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। তাই এখন ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ গেলেও দ্রুতই’ চলে আসে।

 

সেচ নির্ভর কৃষিখাতে আমূল পরিবর্তন

দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে সংবাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী সেচ নির্ভর কৃষিখাতে আমূল পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে বিদ্যুতায়নের কারণে। আগে কৃষি সেচের জন্য ডিজেল নির্ভরতা থাকলেও এখন প্রায় প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়াতে উল্লেখযোগ্য হারে সেচ সংখ্যা বেড়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৯-এ যেখানে সারাদেশে সেচ সংযোগ ছিল দুই লাখ ৩৪ হাজার, সেখানে এখন সেচের গ্রাহক এক লাখ ২৮ হাজার বেড়ে তিন লাখ ৬২ হাজার। প্রবৃদ্ধি ৫৬ ভাগের উপরে। এছাড়াও সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সরকারি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ইডকল ৫০ হাজার সৌর সেচ পাম্প স্থাপন করছে।

 

গ্রামাঞ্চলে নতুন কর্মসংস্থান

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ক্ষুদ্র শিল্প এবং বাণিজ্য খাতে গ্রামীণ জনপদে ১৯ লাখ ৫১ হাজার ১১৩টি সংযোগ রয়েছে। এরমধ্যে ক্ষুদ্র শিল্পে সংযোগ সংখ্যা এক লাখ ৭৮ হাজার ৯৩৪টি। স্থানীয় সূত্র বলছে, গ্রামের মানুষ এখন আর শুধু চাকরির আশায় বসে থাকছেন না। বিদ্যুৎচালিত সেলাই মেশিন, হোসিয়ারি, ধান-চাল-মশলা ভাঙ্গানোর কল, কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্র, ইন্টারনেটে নাগরিক সেবাপ্রদানকারী ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানসহ নানাভাবে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ।

 

মৎস্য-পোল্ট্রি-ডেইরি খাতে উন্নয়ন

সারাদেশে মৎস্য উৎপাদন, মুরগি পালন, গবাদিপশু পালনে গত কয়েক বছরে অভাবনীয় এক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ থাকায় মৎস্য উৎপাদনে আধুনিক সব কারিগরি প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে অধিক ঘনত্বে মৎস্য উৎপাদন করা যাচ্ছে। অন্যদিকে প্রত্যন্ত গ্রামে হাঁস, মুরগির ডিম থেকে ইনকিউবেটরে বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। এভাবে দেশের ১৬ কোটি মানুষের প্রতিদিনের সব ধরনের খাদ্যের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। এতে কর্মমুখর হয়ে ওঠেছে গ্রামীণ পরিবেশ।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিদ্যুৎবিহীন গ্রামাঞ্চলের মানুষ সাধারণত সন্ধ্যা নামার পরপরই খেয়ে-দেয়ে ঘুমানোর আয়োজন করতেন। এখন গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে যাওয়ায় রাতেও কিছু সময় কাজ করার সুযোগ বেড়েছে। ফলে তাদের শ্রমঘণ্টা বা কর্মপরিধি বেড়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে নীরব পরিবর্তন এসেছে। হারিকেন বা কুপির আলোর চেয়ে বিদ্যুতের আলোয় শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের উন্নত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে এই বিদ্যুতায়ন। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন শিক্ষার সুযোগ হয়েছে। এখন গ্রামে গেলে আর বেকার মানুষ পাওয়া যায় না। যে মানুষটি আগে কিছুই করতেন না, তিনি হয়তো একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান বা ইজিবাইক চালাচ্ছেন। অথবা নতুন কোন রাইস মিল বা বিদ্যুৎ চালিত ছোট ছোট কারখানায় কাজ করছেন।

 

রাষ্ট্রীয় ৬ বিতরণ প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যান

রাষ্ট্রীয় ৬টি বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান আরইবি। দেশের মোট ৩ কোটি ৮৭ লাখ গ্রাহকের মধ্যে আরইবির গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটি ৫ লাখ। আরইবি ইতোমধ্যে এর আওতাধীন ৯৯ শতাংশ এলাকা বিদ্যুতায়িত করেছে। বাকি পাঁচ বিতরণ কোম্পানির অধীনে রয়েছে ৮২ লাখ গ্রাহক। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নিয়োজিত বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডেরও (পিডিবি) দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৩৩ লাখ গ্রাহক রয়েছে। ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) গ্রাহক ১২ লাখ ৪৫ হাজার, ঢাকা ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ১০ লাখ গ্রাহক। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা নর্দার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) গ্রাহক ১৪ লাখ। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) দক্ষিণের ২১ জেলার ১৩ লাখ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ দিচ্ছে।

 

আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব.) এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে সংবাদকে বলেন, ‘দেশে মোট ৪৬২টি উপজেলার মধ্যে ৪৬১টিতে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। আরইবির আওতাধীন অফগ্রিডে থাকা ১ হাজার ৫৯টি গ্রামে বিদ্যুতায়নের কাজ চলছে, যা মুজিববর্ষের মধ্যেই শেষ হবে। অফগ্রিডে থাকা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, জামালপুর, ভোলা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ বেশকিছু জেলায় পড়েছে এসব দুর্গম গ্রাম। কোথাও সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে আবার কোথাও সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে এসব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার কাজ চলছে। প্রথম ধাপে ৬৪৬টি গ্রামের এক লাখ ৫৫ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ দিতে ৩৫টি স্থানে নদীর তলদেশ দিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের কাজ চলমান আছে। দ্বিতীয় ধাপে দুর্গম ও প্রত্যন্ত ৩৮৪টি গ্রামের ৯০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ দিতে ৫০টি স্থানে সাবমেরিন ক্যাবল দিয়ে নদী অতিক্রম করে বিদ্যুৎ নেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়ধীন। অবশিষ্ট ২৯ গ্রাম বেশি দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। অধিকাংশ গ্রামেই স্থায়ী জনবসতি নেই। কেবল শুষ্ক মৌসুমে বিক্ষিপ্তভাবে মানুষ বসবাস করায় গ্রাহক ঘনত্ব অত্যন্ত কম। ওই ২৯ গ্রামের প্রায় ছয় হাজার গ্রাহকের জন্য সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য ৩২৬ কোটি টাকার নিজস্ব অর্থায়নের একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। মুজিবর্ষের মধ্যেই শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন হবে।

পিডিবি’র চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. বেলায়েত হোসেন বুধবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সংবাদকে বলেন, ‘আমাদের দুর্গম কিছু এলাকা রয়েছে। পার্বত্য তিন জেলায় ৫৬ হাজার গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর কাজ চলমান রয়েছে। এর বাইরে আরও ৪০ হাজার পরিবার রয়েছে যাদের এত দুর্গম পাহাড়ে বসতি যেখানে গ্রিড লাইন নেয়া সম্ভব নয়, সেখানে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে এসব প্রকল্পের প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া, সন্দ্বীপে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে। অফগ্রিডে কুতুবদিয়া এবং ভোলায় বিদ্যুতায়নের কাজ চলমান। দ্রুত এসব প্রকল্প সমাপ্ত হবে।’

রংপুর ও রাজশাহীর গ্রিড সুবিধাবঞ্চিত দুর্গম চরে বিনামূল্যে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করছে নেসকো। এতে ১৩টি চরে বসবাসরত ১২ হাজার ৬৯০টি পরিবার সৌরবিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে।

নেসকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী জাকিউল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘পদ্মা ও তিস্তার কিছু দুর্গম চরে গ্রিড সুবিধা পৌঁছানো দুষ্কর। তাই এসব চর এলাকা সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রথমে রাজশাহীর চারটি চর, আসাড়িয়াদহ, আলাতুলী, মাজারদিয়া, খিদিরপুরের ছয় হাজার ২৪০টি পরিবারকে সৌরবিদ্যুতের আওতায় আনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই চারটি চরে এক হাজার ৫৭২টি বাড়িতে সোলার হোম সিস্টেম বসানো হয়েছে। এই প্রকল্পে নেসকোর ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা।’

প্রকৌশলী জাকিউল ইসলাম জানান, গত ৮ ডিসেম্বর প্রায় ১০ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার ১২টি চরে ৪৫২১ জন গ্রাহককে সোলার হোম সিস্টেম প্রদান করেছে নেসকো। চরগুলো হলো- উত্তর দাওয়াবাড়ি, দক্ষিণ দাওয়াবাড়ি, কিসমত নেহালি, পূর্ব দাওয়াবাড়ি, কর্দ্দা বিচ-ই, পশ্চিম বিচ-ই, উত্তর পারুলিয়া, দক্ষিণ পারুলিয়া, পূর্ব হলদিবাড়ি, পশ্চিম হলদিবাড়ি, পতিকাপাড়া ও সিনদোরোনা। রংপুরের ৯টি চরে ছয় হাজার ৪৫০টি পরিবারের মধ্যে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে এ কার্যক্রম শেষ হবে বলে তিনি জানান।

ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী শফিক উদ্দিন বলেন, “ওজোপাডিকো’র আওতাধীন ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ এলাকায় বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। অফগ্রিড এলাকা চর মনপুরায় নয় হাজার এবং পটুয়াখালীর কলাতলীতে আট হাজার গ্রাহককে সৌর প্যানেলের মাধ্যমে দ্রুত বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হবে।”

Related Posts

গ্যাসের দাম বাড়লে জনজীবনে বিরূপ প্রভাব পড়বে

FERB

সংকট উত্তরণে তিন প্রস্তাব বিপিসির

FERB

ডিজেলের দাম না বাড়িয়ে আর যেসব বিকল্প ছিল

FERB