দিনের বেলা ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ লাগছে না, দিনে আরও বিদ্যুৎ নিয়ে কি হবে। হাইড্রো ছাড়া সোলার এবং উইন্ড প্রধান এনার্জি হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই-ইলাহী চৌধুরী।
শনিবার (২৪ অক্টোবর) এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার আয়োজিত ফিউচার অব রূফটপ সোলার ইন বাংলাদেশ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, সৌর বিদ্যুতের বিষয়ে স্টোরেজ বিষয়টি ভাবতে হবে। যাতে রাতেও আমরা এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারি। কয়েকজন মিলে যদি ৪-৫ মেগাওয়াট হয় তাহলে সেখান থেকে সরকার কিনতে পারে। দরকার হলে সরকার বেশি দামে কিনবে। ছোট্ট গ্রিড করেছে সোল শেয়ার। বাড়িগুলোতে যার উদ্বৃত্ত রয়েছে সেগুলো শেয়ার করছে, এটিও একটি ভালো আইডিয়া।
সনাতনী চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিআরটিএতে বৈঠক করলাম তাদের ইজিবাইক বিষয়ে আপত্তি। আমি বললাম ওরা তো সার্ভিস দিচ্ছে, রাস্তায় তাদেরও দাবি রয়েছে। তাদের জন্য আলাদা লেন হতে পারে। ইজিবাইক ডিজাইন আধুনিক করা হচ্ছে। এরা এখন রাতে চার্জিং করছে, তাদেরকে সোলারে দিনে চার্জিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পিএম অফিসে অকাজে ব্যাটারি লাগিয়ে দিয়েছে। এটির কোনো প্রয়োজন ছিল না।
স্রেডার চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ল্যাব থাকে। আমাদের মাননিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই আউটসোর্স করতে পারে। ওই ল্যাবগুলোতে সাটিফিকেশন হয়, তাহলে আস্থা বেড়ে যাবে। প্যানেলের ব্যয় শুধু দেখলে চলবে না। বাংলাদেশের সূর্য কিরণের সঙ্গে কোন প্রযুক্তি বেশি প্রযোজ্য সেটিও ভেবে দেখতে হবে।
সোলার ইরিগেশন কাজে লাগাতে চাচ্ছি। গ্রিড লাইনের খরচ কমে গেলে। এতে ৩ মাসও যদি তারা ব্যবসা করে। ডিজেলের সঙ্গে তুলনা করলে অনেক সাশ্রয়ী। এতে লাইন টানতে হলো না।
তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমরা এখন এনার্জিকে সাশ্রয় করে শুধু কাস্টমার প্রান্তে বিবেচনা করছি। যদি সেচে পানি কম লাগে, যদি সার কম ব্যবহার হয়, যদি ট্রান্সপোর্ট কম ব্যবহার হয়। তাতেও কিন্তু এনার্জি সাশ্রয় হয়। সাপ্লাই চেইনে কোথায় কোথায় সাশ্রয় করা যায় ভাবার সময় এসেছে।
মূল প্রবন্ধে ইডকলের হেড অব রিনিউয়েবল এনার্জির এনামুল করীম পাভেল বলেন, রূফটপ সোলার পার্টি নিজেও বসাতে পারেন। আবার থার্ড পার্টিকে ভাড়াও দিতে পারেন। নেট মিটারিং বিষয়টি সুবিধা নিয়ে তারা বর্ধিত বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারছে। এখন অফ পিকে বিদ্যুতের দাম (ইউনিট) ৮.৭০ টাকা পড়ছে। রূফটপ সোলারে ব্যবহার করলে ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকায় বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। টেক্সটাইল মিলসে ৪২০ লাখ বর্গফুট স্পেস রয়েছে। এতে ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১ মেগাওয়াট সোলার রূপটপে (হাই কোয়ালিটি যন্ত্রপাতি) ৫.২২ কোটি টাকা খরচ পড়ছে। ৩ মাসের মধ্যে স্থাপন করা যায়। দামের তুলনা করলে বছরে ৯৫ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়। ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করলে সহজ শর্তে ৮০ শতাংশ ঋণ দিচ্ছে ইডকল। প্যানেলসহ যন্ত্রপাতির দাম কমে আসছে, ২০২৫ সালের পর সৌর বিদ্যুতের খরচ ৪ টাকার নিচে নেমে আসবে।
এনার্জি এন্ড পাওয়ারের এডিটর মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন স্রেডার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন সোলার ইন্টারকন্টিনেন্টাল লিমিটেড দিদার ইসলাম, জিআইজেড রিনিউয়েবল এন্ড সাসটেইনেবল এনার্জি আল মোদাবিবর বিন আনাম, ইস্ট-কোস্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানজীম চৌধুরী, রহিম আফরোজ রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার মেসবাহ মঈন, ইডকলের ডিসিও মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।