জ্বালানি খাতে আরও প্রযুক্তিবান্ধব ও দক্ষ জনবল গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছন বিদ্যুৎ, জ্বালনি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সরকার বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং গ্যাস ক্ষেত্রগুলো নিয়ে মাস্টারপ্লান করছে বলেও জানান তিনি।
আজ শুক্রবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর যন্ত্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে আইইবি’র শহীদ প্রকৌশলী ভবনের কাউন্সিল হলে ‘এনার্জি সিকিউরিটি অব বাংলাদেশ : ইস্যুজ অ্যান্ড অপশনস্’ শীর্ষক সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন তিনি।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা যদি প্রযুক্তিবান্ধব, দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। বাংলাদেশ বর্তমানে জ্বালানি খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই স্বয়ংসম্পূর্ণতার স্থায়ীত্বতা বৃদ্ধি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে আমাদের আরও টেকনোলজি নির্ভর দক্ষ মানবসম্পদ দরকার।’
জ্বালানি ধীরে ধীরে আমদানি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে গ্যাস, তা এক সময় শেষ হয়ে যাবে। আমাদের চাহিদা কিন্তু থাকবে বরং বড়বে। আমরা বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং গ্যাস ক্ষেত্রগুলো নিয়ে মাস্টারপ্লান করছি। ঢাকা শহরে গ্যাস ব্যবস্থাপনায় টোটাল অটোমেশন করার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
আইইবি’কে বিভিন্ন সেক্টর ভিত্তিক মাস্টার প্লান তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবকাঠামোগত মাস্টারপ্লান বাংলাদেশে নেই, তবে সেটা খুব দরকার। যত অবকাঠামোগত নির্মাণ হচ্ছে যেমন পদ্মাসেতু, বড় বড় রাস্তা তার সঙ্গে সঙ্গে এনার্জির চাহিদাও বেড়ে যাচ্ছে। কোন জায়গায় কোন ধরনের ইন্ডাস্ট্রি হবে, সে অনুযায়ী আমাদের গ্যাস, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে পারব।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, আইইবি’র সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৯ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জ্বালনি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি জাতীয় স্বার্থে দেশের বৃহৎ পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র- তিতাস, বাখরাবাদ, রশীদপুর, কৈলাশটিলা ও হবিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্র বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী বহুজাতিক তেল কোম্পানি শেল ওয়েল ইন্টার ন্যাশনাল কাছ থেকে নামমাত্র মূল্য কিনে নিয়েছিলেন।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, ‘ভিশন, মিশন থাকবে কিন্তু প্লান করতে হবে স্বল্প সময়ের জন্য। শীতের সময় আমাদের দেশে বিদ্যুৎ কম লাগে, কিন্তু গরমের সময় বিদ্যুৎ বেশি লাগে। তাই গরমকালে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। তবে সব কিছু শেষ হয়ে যাবে যদি মানবসম্পদ উন্নয়ন না করা যায়। আর মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষে আলাদা একটি মন্ত্রণালয় দরকার।’
সেমিনারে আইইবি’র যন্ত্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন বিভাগের সম্পাদক প্রকৌশলী আবু সাঈদ হিরো। বিশেষ অতিথি হিসেবে মো. আবদুস সবুর ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- আইইবি’র ভাইস-প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন, আইইবি’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু), পিইঞ্জ.। সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আইইবি’র ভাইস-প্রেসিডেন্ট(একা. ও আন্ত) ও পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন এবং জিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামান। সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিভাগের ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আহাসন বিন বাশার (রিপন)।